নিম পাতার 10 টি উপকারিতা - নিম পাতার ব্যবহার

আমাদের আশেপাশে অসংখ্য নিম গাছ রয়েছে কিন্তু আমরা কি জানি নিম পাতার উপকারিতা কি। হয়তো অনেকে জানেন আবার হয়তো অনেকে জানেন না তাই যারা জানেন না তারা চলুন আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক নিম পাতার 10 টি উপকারিতা এবং নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে।
নিম পাতার 10 টি উপকারিতা

নিম পাতার অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে যেগুলো জানলে আপনি অবাক হবেন। বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে নিম পাতা ব্যবহার করা যায়। তাই নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য নিচের অংশগুলো মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ নিম পাতার 10 টি উপকারিতা - নিম পাতার ব্যবহার 

নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিম গাছকে ঔষধি গাছ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কারণ এই নিম গাছ এবং নিম পাতার মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুনাগুন। তাই আসুন আজকের আর্টিকেলের এই অংশ থেকে জেনে নেওয়া যাক নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। প্রথমে জেনে নিন নিম পাতার 10 টি উপকারিতা।

  • চুলের খুশকি ভালো করে
  • ব্রণ ভালো করে
  • চুলকানি ভালো করে
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
  • কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে
  • দাঁতের জন্য উপকারী
  • ক্ষতস্থান ভালো করতে উপকারী
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • চোখের সমস্যা ভালো করে
  • কান ফোড়া ভালো করে

চুলের খুশকি ভালো করে

অনেক সময় আমাদের চুলের মধ্যে খুশকি দেখা দেয় সেই খুশকি ভালো করার জন্য নিমপাতা অনেক উপকারী। যদি আপনার চুলের খুশকি দূর করতে চান তাহলে নিম পাতা সংগ্রহ করে সেগুলো ভালোভাবে পিষে নিবেন তারপরে চুলের মধ্যে ভালোভাবে লাগাবেন তাহলে চুলের খুশকি দূর হয়ে যাবে।

ব্রণ ভালো করে

মুখে ব্রণ বের হলে মুখ নষ্ট হয়ে যায় সেজন্য অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু চিন্তার কোন কারণ নেই আপনি চাইলে নিমপাতা ব্যবহার করে মুখের ব্রণ ভালো করতে পারেন। সেজন্য গাছ থেকে নিম পাতা সংগ্রহ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে পিষে নিবেন তারপর সেগুলো ব্রনের উপর লাগাবেন এভাবে কয়েকদিন ব্যবহার করলে ব্রণ ভালো হয়ে যাবে। 

আরো পড়ুনঃ গোলাপ জলের ১০ টি উপকারিতা - কোন গোলাপ জল ভালো

চুলকানি ভালো করে

আমাদের শরীরে বিভিন্ন কারণে অনেক সময় চুলকানি হয়ে থাকে। এতে করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বজর পরিমাণে চুলকায়। চুলকানি ভালো করার জন্য নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন সেজন্য নিম পাতার দেয়া পানি চুলকানির উপর দিতে পারেন অথবা নিমপাতা পিষে চুলকানির উপর লাগাতে পারেন।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য নিমপাতা বেশ কার্যকরী। আপনি যদি চান আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে তাহলে নিমপাতা এবং সেই সাথে হলুদ দিয়ে ভালোভাবে পিষে নিবেন এবং তারপরে সেগুলো আপনার ত্বকের মধ্যে লাগাবেন। এভাবে যদি কয়েকদিন ব্যবহার করেন তাহলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। 

কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে

নিম পাতা যেহেতু তেতো সেজন্য এটি ভালো কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। আপনার পেটে যদি কৃমি হয়ে থাকে তাহলে নিম পাতার রস বের করে সেগুলো খেয়ে নিতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার পেটে কৃমি ভালো হয়ে গেছে যদিও খেতে অনেক তেতো  তারপরেও খেতে হবে।

দাঁতের জন্য উপকারী

নিম পাতা এবং নিম পাতার ডাল দাঁতের জন্য উপকারী আপনি যদি নিম পাতার ডাল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন তাহলে এটা আপনার দাঁত ভালো রাখবে। দাঁত পরিষ্কার রাখবে এবং দাঁতের যে কোন সমস্যা থেকে মুক্ত রাখবে দাঁত শক্ত রাখবে। 

ক্ষতস্থান ভালো করতে উপকারী

আমাদের শরীরে অনেক সময় ক্ষত হয় তখন সেগুলো ক্ষত তাড়াতাড়ি ভালো হতে চায় না। তাই আপনার শরীরে যদি সেরকম কোনো ক্ষতস্থান থাকে তাহলে সেগুলো ভালো করার জন্য নিম পাতার পানি দিয়ে ক্ষতস্থান ধরে নিবেন এবং নিম পাতা পিষে লাগাবেন। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

নিম পাতার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভালো রকম কাজ করে থাকে। আপনি যদি নিম পাতার রস খেতে পারেন অথবা নিম পাতা ভেজে খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিম পাতা খেতে পারেন। 

চোখের সমস্যা ভালো করে

চোখের সমস্যা ভালো করার জন্য নিম পাতা অনেক উপকারী। আপনার চোখে যদি কোন রকম সমস্যা দেখা দেয় তাহলে প্রথমে নিম পাতা নিবেন নিব সেগুলো পানির মধ্যে দিয়ে কুসুম গরম করে নেবেন তারপর ঠান্ডা করে সেই পানি দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে নিবেন তাহলে চোখের সমস্যা ভালো হয়ে যাবে। 

কান ফোড়া ভালো করে

কান ফোড়া ভালো করার জন্য নিম পাতা অনেক উপকারী। সেজন্য কয়েকটি নিমপাতা নিম এবং তার মধ্যে হালকা পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিন তারপর সেগুলো ভালোভাবে পিষে নিয়ে কান ফোড়ায় লাগান তাহলে কান ফোড়া ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 

আরো পড়ুনঃ কিসমিস খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

এগুলো নিম পাতার উপকারিতা কিন্তু নিম পাতার কিছু অপকারিতা রয়েছে সেগুলো হলঃ বেশি নিমপাতা খাওয়ার পরে পেটে সমস্যা হতে পারে এবং অনেকের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের এলার্জি সমস্যা বেশি হতে পারে, গর্ভবতী মায়ের সমস্যা হতে পারে নিমপাতা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে, বেশি পরিমাণ নিম পাতা খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এইগুলোই মূলত নিম পাতার অপকারিতা তাই সবসময় নিমপাতা পরিমাণ মতো ব্যবহার করবেন। 

খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়

খালি পেটে নিম পাতা খেলে এটা আপনার ডায়াবেটিস ভালো করতে সাহায্য করবে এবং পেটের মধ্যে যদি কৃমি থাকে তাহলে সেটা মেরে ফেলবে। এছাড়াও খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে চর্মরোগ ভালো করতে সাহায্য করে থেকে এবং কুষ্ঠ রোগীদের জন্য নিম পাতা অনেক উপকারী। এছাড়া পেটের ব্যাথা ভালো করার জন্য খালি পেটে নিম পাতার রস খেতে পারে। তবে কখনোই অতিরিক্ত বেশি পরিমাণ খাবেন না। 

নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি

এলার্জি ভালো করার জন্য নিম পাতা অনেক উপকারী। সে জন্য গাছ থেকে নিম পাতা সংগ্রহ করবেন এবং সেগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে পিষে গুড়ো করবেন। তারপর হালকা পরিমাণ নিম পাতার গুড়ার সাথে দুই চামচ ভুষি মিশিয়ে এক গ্লাস পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন এবং তারপরে কিছুক্ষণ পর সেগুলো মেশানো পানি পান করবেন। এভাবে যদি কয়েক দিন নিম পাতার মিশ্রণ তৈরি করে ফোন করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার এলার্জির সমস্যা ভালো হয়ে গেছে। 

নিম পাতার ব্যবহার

নিম পাতা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায় কখনো নিম পাতার রস ব্যবহার করা যায় আবার কখনো নিম পাতা বেটে সেগুলো ক্ষতস্থানে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও নিমপাতা ভেজে খাওয়া যায়। তাই আপনি যেভাবে পারবেন সেভাবেই ব্যবহার করতে পারেন। 

আপনি যেভাবে ব্যবহার করবেন সেভাবেই ভালো উপকারিতা পাবেন। তবে মনে রাখবেন নিম পাতার উপকারিতা থাকলে অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ক্ষতি হতে পারে তাই কখনো অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যবহার করবেন না। পরিমাণ মতো ব্যবহার করবেন তাহলে ভালো উপকারিতা পাবেন। 

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

নিম পাতার মাধ্যমে চুলকানি ভালো করা যায় সেজন্য চুলকানি ভালো করতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। আপনার শরীরে যদি কোথাও চুলকানি হয়ে থাকে তাহলে গাছ থেকে নিম পাতা সংগ্রহ করবেন তারপরে সেগুলো পানির মধ্যে দিয়ে হালকা পরিমান গরম করে নিবেন তারপরে চুলকানির স্থান গুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন। 

আরো পড়ুনঃ দই খাওয়ার উপকারিতা - প্রতিদিন দই খেলে কি হয়

এরপরে নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে সেগুলো চুলকানির স্থানে ভালোভাবে লাগাবেন। এভাবে যদি কয়েকদিন নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুলকানি ভালো হয়ে যাবে। তারপরেও যদি ভালো না হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। 

আমাদের শেষ কথা 

নিম পাতার 10 টি উপকারিতা এবং নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে আশা করছি আপনারা এই সকল বিষয়ে জানতে পেরেছেন। তাই এই সকল উপকারিতা পাওয়ার জন্য নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন। 

আর আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাকে কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এবং এরকম আরও বিষয় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url