চুইঝাল কি - চুইঝাল গাছ চেনার উপায়
পোস্ট সূচিপত্রঃ চুইঝাল কি - চুইঝাল গাছ চেনার উপায়
- চুইঝাল কি
- চুইঝাল গাছ চেনার উপায়
- চুইঝালের উপকারিতা
- চুই ঝাল খাওয়ার নিয়ম
- চুই ঝাল এর দাম
- চুই ঝাল চাষ পদ্ধতি
- চুই ঝাল চারা কোথায় পাওয়া যায়
- চুইঝাল কি - চুইঝাল গাছ চেনার উপায় ঃ শেষ কথা
চুইঝাল কি
চুই ঝাল একটি উদ্ভিদ জাতীয় গাছ। এটা কিছুটা পান পাতা গাছের মতো হয়ে থাকে অর্থাৎ এটি লতারের মতো উঠে যায়। যখন চুই ঝাল গাছের বয়স অনেক বেশি হয় তখন সেটা বেশ মোটা হয় এবং তখন সেটা কেটে বিভিন্ন মাছ মাংস রান্না করার তরকারির মধ্যে দেওয়া হয়।
আরো পড়ুনঃ পিপলটি গাছের উপকারিতা - পিপুল গাছের অপর নাম কি
এতে করে মাছ মাংসের তরকারির স্বাদ অনেক বেশি হয়। এবং এটা যখন তরকারির মধ্যে দেওয়া হয় তখন তরকারি রান্না করার পরে এটি চুষে বা চিবিয়ে খেয়ে ফেলে দিতে হয়। আশা করছি চুইঝাল কি জানতে পারলেন।
চুইঝাল গাছ চেনার উপায়
আমরা হয়তো সবাই জানি চুইঝাল গাছকে মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে যখন হোটেলের রান্না করা হয় অথবা অনেক বেশি মাংসের তরকারি বা মাছের তরকারি রান্না করা হয় তখন সেই তরকারির মধ্যে চুইঝাল দেওয়া হয়ে থাকে।
এখন আপনাদের প্রশ্ন হল চুইঝাল গাছ চেনার উপায় কি? চুইঝাল গাছ চেনার উপায় খুবই সহজ। চুইঝাল গাছের পাতা দেখতে পান পাতার মত হয়ে থাকে এবং চুইঝাল গাছের প্রতি গিটাতে ঘন ঘন এবং বড় শিকড় হয়ে থাকে।
এই শিকড়ের সাহায্যে চুইঝাল গাছ খুব সহজেই যে কোন কিছু আটকে ধরে উপরের দিকে উঠে যেতে পারে। এবং চুইঝাল গাছের শিকড় দেখতে কিছুটা কালো হয়ে থাকে। এগুলোই মূলত চুইঝাল গাছ চেনার উপায়।
চুইঝালের উপকারিতা
চুইঝালের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে কিন্তু আমরা অনেকেই তা জানি না তাই নিচের অংশগুলো থেকে জেনে নিন চুইঝালের উপকারিতা উপকারিতা গুলো কি।
১। আমাদের বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষের গ্যাস্টিকের সমস্যা রয়েছে আর এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে চুই ঝাল অনেক উপকারী।
২। শরীরে যখন কোলেস্টরের মাত্রা বেড়ে যায় তখন হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এছাড়াও যাদের হৃদ রোগ রয়েছে তাদের শরীরের কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
৩। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য চুইঝাল বেশ উপকারী। এটি খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৪। আমাদের অনেকেরই খাবারের রুচি কম এবং ক্ষুধামন্দা এর সমস্যা রয়েছে। যাদের খাবারের রুচি কম তারা যদি চুইঝাল খেতে পারে তাহলে খাবারের রুচি বৃদ্ধি পাবে।
আরো পড়ুনঃ বাসক পাতার ১০ টি উপকারিতা - বাসক পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
৫। বর্তমানে অনেকেই রয়েছে যাদের রাতে ঘুম আসে না তাই যাদের এই সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য চুইঝাল অনেক উপকারী এটা খেতে পারলে ঘুম ভালো হয়।
৬। অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা অনুভব হয়ে থাকে। তো আপনার যদি এরকম ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য চুইঝাল অনেক উপকারী এটা ব্যথা ভালো করতে কাজ করে থাকে।
৭। চুইঝাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বেশ ভালো উপকারী এটা শরীরের বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক ধ্বংস করে এতে করে বিভিন্ন রোগ জীবাণুর হাত থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
৮। যখন একজন মহিলা গর্ভধারণ করে তারপরে তার অনেক ব্যাথা হয়ে থাকে আর এই ব্যথা উপশম করার জন্য চুইঝাল বেশ উপকারী হিসেবে কাজ করে থাকে।
চুই ঝাল খাওয়ার নিয়ম
অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন চুই ঝাল খাওয়ার নিয়ম কি? আসলে এটি খাওয়ার একটি
নিয়ম হল সেটা হল বিভিন্ন রকম ভারী খাবারের সাথে রান্না করে খাওয়া অর্থাৎ মাছ
মাংস এগুলো রান্না করার সময় তরকারিতে ব্যবহার করতে হয় এবং যখন এগুলো রান্না করা
হয়ে যায় তখন সেগুলো চিবিয়ে অথবা চুষে খেতে হয়।
অথবা যখন অনেক বেশি খিচুড়ি একসাথে রান্না করা হয় তখন তার মধ্যে দিয়েও চুইঝাল খাওয়া যায়।তো এটাই হলো চুইঝাল খাওয়ার নিয়ম। যেমন আমরা সজনে ডাটা চিবিয়ে খায় বা চুষে খায় সেরকমভাবে এটা তরকারির মধ্যে দিয়ে খেতে হয়। আশা করছি চুই ঝাল খাওয়ার নিয়ম ভালোভাবে জানতে পারলেন।
চুই ঝাল এর দাম
অনেকে চুই ঝাল কিনতে চান কিন্তু এটা সঠিক দাম জানেন না তাই আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদেরকে জানাবো চুই ঝাল এর দাম। বিশেষ করে এটি গরুর মাংসের সাধ বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেজন্য অনেকেই এটা কিনে থাকেন।
চুই ঝাল বেশিরভাগ বিক্রি হয়ে থাকে কোরবানির ঈদের সময়। এবং এটা যেহেতু বাংলাদেশের সব জায়গায় চাষ করা হয় না এজন্য এটির দাম কিছুটা তুলনামূলক বেশি। চুই ঝাল এর দাম দাম গুলো হল।
- ২৫০ গ্রাম - ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা
- ৫০০ গ্রাম - ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা
- ১ কেজি - ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা
চুই ঝাল চাষ পদ্ধতি
চুই ঝাল চাষ পদ্ধতি খুবই সহজ এটা যে কোন গাছের আশেপাশে অর্থাৎ আম সুপারি কাঁঠাল এ জাতীয় গাছের ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে সেখানে লাগাতে হয়। সেই গর্তের মধ্যে কিছুটা গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, পটাশ দিয়ে ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে নিয়ে সাত দিন সুন্দর ভাবে রেখে দিতে হবে তারপরে সেখানে চুই ঝাল গাছের চারা রোপন করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কলমি শাকের ক্ষতিকর দিক - কলমি শাকের উপকারিতা
চারা রোপন করার পরে ভালোভাবে পানি দিয়ে দিতে হবে এবং যত্ন করতে হবে যখন গাছগুলো কিছুটা বড় হয়ে যাবে এবং গাছের শিকড় ধরতে শুরু করবে তখন সেগুলো পাশে থাকা বড় বড় আম কাঁঠাল সুপারি ইত্যাদি গাছের মধ্যে ভালোভাবে আটকে দিতে হবে তখন সেগুলো আস্তে আস্তে গাছের সাথে লেগে উঠে যাবে। এভাবেই চুই ঝাল চাষ করতে হয়।
চুই ঝাল চারা কোথায় পাওয়া যায়
চুই ঝাল করার জন্য কিন্তু ছাড়ার প্রয়োজন হয় তবে এটি যেহেতু বাংলাদেশের সব জায়গায় হয় না তাই চুই ঝাল চারা পাওয়া কিছুটা কষ্টসাধ্য তবে আপনি যদি অনেক বেশি পরিমাণে চাষ করতে চান তাহলে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল খুলনা বাগেরহাট সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে চুই ঝাল গাছের চারা পাবেন।
তো আপনি যদি যারা নিতে চান তাহলে আপনাকে সেগুলো অঞ্চলে যেতে হবে। অথবা অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে সেল করে থাকে আপনারা চাইলে অনলাইনে মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারেন। আশা করছি চুই ঝাল চারা কোথায় পাওয়া যায় এটাও ভালোভাবে জানতে পারলেন।
চুইঝাল কি - চুইঝাল গাছ চেনার উপায় ঃ শেষ কথা
চুইঝাল কি এবং চুইঝাল গাছ চেনার উপায় সহ চুই ঝাল সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে এগুলো সম্পর্কে অনেক ভালো তথ্য পেয়েছেন।
চুই ঝাল অনেক দামী একটি উদ্ভিদ তাই আপনি চাইলে এটি আপনার বাড়ির আশেপাশে লাগাতে পারে না। এছাড়া আপনি রান্না করার সময় এগুলো ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অনেক ভালো স্বাদ পাবেন। তো সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url